কিডনিতে পাথর (Kidney Stone) বা রেনাল ক্যালকুলাস একটি সাধারণ কিন্তু যন্ত্রণাদায়ক শারীরিক সমস্যা। এটি মূলত কিডনির ভেতরে খনিজ এবং লবণ জমা হয়ে তৈরি হয়। কিডনিতে পাথরের ধরন, কারণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে।
কিডনিতে পাথরের প্রকারভেদ:
**ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর (Calcium Oxalate Stone)**
এই ধরনের পাথর সবচেয়ে সাধারণ। এটি ক্যালসিয়াম এবং অক্সালেট যৌগ থেকে তৈরি হয়।
**কারণ:**
– বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া
– শরীরে অক্সালেটের মাত্রা বৃদ্ধি (যেমন পালং শাক, বাদাম, চকলেট ইত্যাদি থেকে)
– পানি কম পান করা
**ইউরিক এসিড পাথর (Uric Acid Stone)**
এই ধরনের পাথর সাধারণত উচ্চমাত্রার ইউরিক এসিডযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। এটি পুরুষদের মধ্যে বেশি এবং যারা বেশি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান তাদের ঝুঁকি বেশি।
**কারণ:**
– উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য যেমন লাল মাংস, সামুদ্রিক মাছ
– ডিহাইড্রেশন
– গাউট রোগ
**স্ট্রুভাইট পাথর (Struvite Stone)**
এই পাথর সাধারণত মূত্রনালীর সংক্রমণের (UTI) কারণে হয়। এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বড় আকার ধারণ করতে পারে।
**কারণ:**
– ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
– অনিয়ন্ত্রিত মূত্রনালী সংক্রমণ
**সিস্টিন পাথর (Cystine Stone)**
এই পাথর তুলনামূলকভাবে বিরল এবং সিস্টিনুরিয়া নামক একটি বংশগত রোগের কারণে হয়, যা সিস্টিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিডের অতিরিক্ত নিঃসরণ ঘটায়।
**কারণ:**
– বংশগত সমস্যা
– সিস্টিন নামক প্রোটিনের বেশি পরিমাণ নিঃসরণ
সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গ:
– তীব্র পিঠ বা তলপেটে ব্যথা
– প্রস্রাবে রক্ত
– প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া
– বমি বা বমি বমি ভাব
– ঘন ঘন প্রস্রাবের অনুভূতি হওয়া
কিডনিতে পাথর হওয়া একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে যদি এটি ঠিকমতো চিকিৎসা না করা হয়। তাই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।